পুরান ঢাকাসহ পুরো রাজধানীকে ভূমিকম্প বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণ মন্তব্য করে, পুরনো ভবনগুলোর বিষয়ে এখনই প্রকৌশলগত সমাধানের তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
গতকাল শুক্রবার গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে দেশের তিন জেলায় শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ।
রিখটার স্কেলের ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু ভবনে ফাটল ধরেছে, পলেস্তারা খসে পড়েছে অনেক আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনেরও।
ভূমিকম্প নিয়ে মিরপুরে আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলার উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান।
ঝুঁকি বিবেচনায় তিন বছরের কর্মসূচি নিয়ে দুর্যোগ প্রস্তুতির ঘাটতিগুলো পূরণের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
এদিনের মত গেল পাঁচ বছরে এত শক্তিশালীভাবে ভূমিকম্প অনুভূত হয়নি বলে মন্তব্য করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “এটা বারবার সতর্ক বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এটা বিবেচনায় নিয়ে আমাদের প্রস্তুতিটা নেওয়া দরকার।ৃকথা হচ্ছে আমাদের বিল্ডিং কোডগুলো এখনকার বিণ্ডিং মেনে চলছে। কিন্তু প্রচুর বিল্ডিং যেগুলো হয়ে গেছে, যেগুলো রাজউক তার পরিসংখ্যানে বলে ৯০% এর অনুমোদন নেই বা ব্যত্যয় ঘটেছে সেগুলো কি হবে এরকম ভূমিকম্প রিপিট হতে থাকে।”
এটা অবশ্যই আশঙ্কার কথা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আমি কোনো স্বস্তির কথা শোনাতে পারছি না। সতর্কবাণী ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতিটা আরও অনেক আগেই শুরু হওয়া উচিত ছিল। আর দেরি না করে এখনই শুরু করা যে পুরনো বিল্ডিংগুলোকে মজবুত করার মতো প্রকৌশলগত সমাধানের দিকে যাওয়া আর জলাশয় ও পাহাড়ে হাত না দেওয়া।”
ঢাকা ও পুরনো ঢাকা ঝুঁকিতে থাকার কারণ তুলে ধরে রিজওয়ানা বলেন, সেখানে ভবনের সংখ্যা বেশি।
এগুলোকে মজবুতে আবার প্রযুক্তিগত সমাধানের দিকে যেতে বাধ্য করা। “আর দুযোগের প্রস্তুতিও বাড়াতে হবে। যত নিয়মত কানুন মেনেই সবকিছু করেন না কেন, দুযোগ যদি আনৈক শক্তিশালী হয়ে যায় তখন কি করবে। প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন রয়েছে। ভূমিকম্প ঝুঁকি ও অগ্নি ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে তিন বছরের একটা কর্মসূচি নিয়ে যেখানে যেখানে ঘাটতি আছে সেগুলো পূরণ করা প্রয়োজন।”
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবায়েত কবীর জানান, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে, কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। স্থায়ীত্ব ছিল ২৬ সেকেন্ড।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
এ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার ঘটনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে অবিলম্বে মাঠপর্যায়ে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
দ্রুত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন শেষে তা অবহিত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে তাৎক্ষণিক একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
কন্ট্রোল রুমের টেলিফোন ০২৫৮৮১১৬৫১ এ নাম্বারে সকলকে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি, এ নিয়ে কোনো ধরনের গুজব বা বিভ্রান্তিতে কান না দিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
বড় ঝুঁকিতে পুরান ঢাকা, প্রকৌশলগত সমাধানের তাগিদ পরিবেশ উপদেষ্টার
- আপলোড সময় : ২২-১১-২০২৫ ০৩:৫৭:০২ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২২-১১-২০২৫ ০৩:৫৭:০২ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার